আমেরিকা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নতুন কমিটি : প্রেসিডেন্ট টুটুল সেক্রেটারী ফাহাদ ; ঢাকায় বিজনেস নেটওয়ার্কিং ডিনার ২৩ ডিসেম্বর
নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশী আমেরিকান ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘আমেরিকা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এবিসিসিআই) এর নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে আসিফ বারী টুটুল প্রেসিডেন্ট, ফাহাদ সোলায়মান সেক্রেটারী এবং বিলাল চৌধুরী কোষাধ্যক্ষ মনোনীত হয়েছেন।
এদিকে সম্প্রতি গঠিত এবিসিসিআই’র নতুন কমিটির উদ্যোগে আগামিী ২৩ ডিসেম্বর ঢাকার বনানীস্থ হোটেল শেরাটনে বিজনেস নেটওয়ার্কিং ডিনার’র আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশী এবং যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করাই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। অনুষ্ঠানে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন’র তহবিলে ১ কোটি টাকা অনুদান হস্তান্তর করা হবে। খবর ইউএনএ’র।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে গত ১৬ অক্টোবর বুধবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এবিসিসিআই’র প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ উপরোক্ত তথ্য জানান। এসময় তিনি সংগঠনের নতুন কার্যকরী কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যদের নাম ঘোষণা করে তাদের পরিচয় করিয়ে দেন।
এবিসিসিআই’র ২১ সদস্যের নির্বাহী কমিটি কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন: প্রেসিডেন্ট- আসেফ বারী টুটুল, সেক্রেটারী- ফাহাদ সোলায়মান এবং কোষাধ্যক্ষ বিলাল চৌধুরী। ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদেও উল্লেখ্যযোগ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন চেয়ারম্যান গিয়াস আহমেদ, সদস্য যথাক্রমে হাসানুজ্জামান হাসান, আহমেদুল কবির বারো ভুইয়া, আজিজ আহমেদ, আবু হানিপ, এটর্নী মঈন চৌধুরী, জাকারিয়া মাসুদ জিকো, ফকরুল ইসলাম দেলোয়ার, তারেক হাসান খান, মুহাম্মদ আব্দুল কাদের ভূইয়া (শিশির), শাহরিয়ার রহমান, জাহিদ মিন্টু, একেএম ফজলুল হক, শাহ জে চৌধুরী, মোস্তাক আহমেদ, আতিকুল ইসলাম জাকির, আকিব হোসেন, মোহাম্মদ খালেক, মোহাম্মদ খলিলুর রহমান প্রমুখ।
কমিটি ঘোষণার পর শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি আসেফ বারী টুটুল, সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মানসহ অন্যন্যারা। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আনিসুল কবির জসির, জাকারিয়া মাসুদ জিকো, নূর আমিন, নুরুল আজিম, রিফাতি ফারুক, আলমগীর খান আলম, আতিকুল ইসলাম জাকির, মফিজুর রহমান, শাহ জে চৌধুরী, আসলাম হোসাইন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে এবিসিসিআই প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে গিয়াস আহমেদ বলেন, আমরা আমেরিকান চেম্বারের সাথে কথা বলেছি, আমেরিকান চেম্বারের মেম্বারশীপ তখন আমরা নিয়েছিলাম এবং আমেরিকান মেম্বারের যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট তাকে ‘আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ’ (এমচ্যাম) গঠন করার জন্য আমরা অনুরোধ করি। আমরা যখন আমেরিকা-বাংলাদেশ চেম্বার গঠন করি তখন বাংলাদেশে কোনও ধরনের চেম্বার অব কমার্সের কার্যক্রম ছিলো না। আমরা কয়েকটি সভাও করেছি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট তখন বলেছেন, বাংলাদেশে তারা এমচ্যাম গঠন করতে চান না, কারন বাংলাদেশে আমেরিকানদের কোন বিজনেস নেই। আজ থেকে ২০ বছর আগে বাংলাদেশে আমেরিকানদের তেমন কোন বিজনেস ছিলো না। সে কারনে এমচ্যাম গঠন করার জন্য তিনি রাজি হননি। পরবর্তীতে আমাদের অনুরোধে এমচ্যাম গঠিত হয়েছে এবং বাংলাদেশে আমরা আমেরিকানদের নিয়ে এ ব্যাপারে কয়েকটি সভাও করেছি।
গিয়াস আহমেদ জানান, এবিসিসিআই পূর্ব থেকেই কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এ বছরের ফোবানা সম্মেলন আয়োজনের পর থেকে সংগঠনটি বিশেষভাবে সক্রিয় হয়েছে। নিউইয়র্কের ব্যবসায়ীদের নিয়ে পূর্বে সংগঠনের কমিটি গঠিত হলেও এবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য ষ্টেটের ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করে একটি শক্তিশালী কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসময় তিনি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের শিকারদের জন্য অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন’র তহবিলে ১ কোটি টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণা করেন।
গিয়াস আহমেদ বলেন, ঢাকার শেরাটন হোটেলে বিজনেস নেটওয়ার্কিং ডিনারে আমাদের লক্ষ্য হলো, ব্যবসায়িক উন্নয়নকে উৎসাহিত করা। অনাবাসী বাংলাদেশী (এনআরবি) হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়নে সাহায্য করার জন্য আমেরিকা ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সেতু ও সংযোগ তৈরি করা। আমরা বাংলাদেশেও এবিসিসিআই’র একটি শাখা প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি।
প্রসঙ্গত গিয়াস আাহমেদ বলেন, ২০০১ সালে এবিসিসিআই গঠন করেছিলাম। বাংলাদেশে আমরা ককাসের মাধ্যমে চট্টগ্রামে ইউনিভিার্সিটি ফর ওমেন প্রতিষ্ঠা করতে সহযোগিতা করেছিলাম। এটা এর আগে আরও কয়েকটি দেশ ভারত, নেপাল, পাকিস্তানও চেয়েছিলো। কিন্তু আমরা চট্টগ্রামে এটা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আর এবিসিসিআই শুধু বিদেশের সাথে ব্যবসায়িক সুসম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় ছিলো না। আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার জন্যও লড়াই করেছি। আমরা স্বাধীনতার পক্ষে এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেও কাজ করেছি। কারন বাংলাদেশে যদি গণতন্ত্র থাকে, ন্যায়বিচার থাকে তাহলে আমারা যারা প্রবাসে ব্যবসা করি আমাদের এ কার্যক্রম আরও সুফল হয়। ভিনদেশীরা আমাদেরকে সেভাবেই চিনবে।
সংবাদ সম্মেলনে আসেফ বারী টুটুল বলেন, নতুন কমিটির নেতৃেত্ব ‘আমেরিকা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এবিসিসিআই) সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী সংগঠন হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমাদের প্রচেষ্টায় আমেরিকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের একটি যোগসূত্র তৈরী করতে আমরা সচেষ্ট থাকবো। নভেম্বরে লাগোয়ার্ডিয়া ম্যারিয়টে নতুন কমিটির অভিষেক আয়োজন করা হবে।
ফাহাদ সোলায়মান বলেন, প্রবাসে থাকলেও আমাদের মন এবং মননে সব সময় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সাাথে বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্কিং সমৃদ্ধ করার আরো উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
সংগঠনের অন্যতম ডিরেক্টর এনামুল হক এনাম জানান, বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দুতাবাস কর্মকর্তা ও মিডিয়া কর্মীরা এই বিজনেস নেটওয়ার্কিং ডিনারে উপস্থিত থাকবেন। ২৩ ডিসেম্বরের ঢাকার বিজনেস নেটওয়ার্কিং ডিনারের মাধ্যমে আমরা ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের প্রচেষ্টাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবো।
বিলাল চৌধুরী বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ‘জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন’র তহবিলে ৫ হাজার ডলার করে অর্থ প্রদান করেছেন। যার পরিমান প্রায় ৩০ হাজার ডলার। আমরা এক কোটি টাকা বাংলাদেশের নতুন সরকারের হাতে তুলে দিতে সক্ষম হবো।