নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত বিভিন্ন মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন এনটিভি চেয়ারম্যান, সাবেক এমপি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালু। এনটিভি পরিবারের ব্যানোরে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) অপরাহ্নে জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি হলে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন কাভার করতে আসা কয়েকজন সাংবাদিকও এসময় উপস্থিত ছিলেন। ‘সাংবাদিকদের কথোপকথন’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভায় মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী’র সফর সঙ্গী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বাদল ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) একাংশের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরীও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। পরবর্তীতে তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন। খবর ইউএনএ’র।
এনটিভি পরিবারের সাবেক সদস্য ও সাপ্তাহিক খবর সম্পাদক ফরিদ আলমের সঞ্চালনায় সভায় মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী বলেন, আজ নিউইয়কে বসে মনে হচ্ছে আমি এনটিবি পরিবারেই আাছি। তিনি বলেন, সাংবাদিকতা একটি কঠিন কাজ। আর নিউজ করে মানুষকে খুশি করা আরো কঠিন কাজ। তিনি বলেন, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে পর্যদুস্ত বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এখন সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে ড. ইউনূস সরকারের জনকল্যানমূলক কাজে সহায়তা করতে সব মহলের প্রতি তিনি আহবান জানান। বলেন, আইনের উর্ধ্বে আমরা কেউই নই। আমি অন্যায় করলে আমারও বিচার হতে হবে।
মোসাদ্দেক আলী মিডিয়া স্বাধীনতার উপর গুরুত্তারোপ বলেন, ১/১১-এর সময় আমি যখন জেলখালায় ছিলাম তখন তৎকালীন দৈনিক ইত্তেফাক-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রাহাত খান সহ আরো অনেকই জেলখানায় গিয়ে আমাকে বলেছিলেন আপনি তিনটি মিডিয়ার মালিক হওয়ার পরও কেন জেলখানায় থাকবেন? আমরা আপনার জন্য তদবীর করতে পারি? তখন আমি বলেছিলাম- ামার জন্য তদবীর করবেন না। তিনি বলেন, প্রবাস থেকেও সাংবাদিকরা দায়িত্ব পালন করে দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত তিনি আরো বলেন যে, এনটিভি একটি পরিবার। এনটিভি-কে যারা আছেন তারা সবাই মালিক, কেউ কর্মচারী নন। আমার অনুপস্থিতিতে এনটিভি নিয়মিত সম্প্রচারে থাকায় তিনি সংশ্লিস্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, মিডিয়ায় কাজ করার স্বাধীনতা না থাকলে সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। তিনি বলেন, এজন্যই আমার বিরুদ্ধে আমার মিডিয়ায় নিউজ হয়েছে।
একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মোসাদ্দেক আলী বলেন, দেশে যে সকল সাংবাদিক অন্যায় করেছে তাদের বিচার হওয়া উচিত। আরো বলেন, এনটিভি’র বেতন নিয়মিত হয়। বেতন পরিশোধে কোন নরচর নেই। বিগত সরকারের সময়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা সম্পর্কিত অপর এক প্রশ্নর উত্তরে তিনি বলেন, পালিয়ে থাকার কষ্ট কি তা ভূক্তভোগীরাই জানেন। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আমাদের দেশান্তরিত হতে হয়েছিল।
লুৎফর রহমান বাদল তার বক্তব্যে শেখ হাসিনার সরকারের সময় তাকে কিভাবে ব্যাংক আর ক্রিড়াঙ্গনে থেকে বিতাড়িত করা হয় তা সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৫ বছরের নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বলেন, ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের বিদায় হয়েছে। এখন সবার দায়িত্ব নতুন সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা দেয়া এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পরিণতি দেখে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। সবার মনে রাখা উচিৎ ক্ষমতা চিরকাল থাকে না। তিনি বলেন, আমরা সাংবাদিকরা যদি ফ্যাসিবাদী সরকারের দালালী, তোয়াজ না করতাম তাহলে ফ্যাসিবাদ মাথা তুলে ধরতে পারতো না। তিনি দলীয় লেজুরবৃত্তি না করে সাদা-কে সাদা আর কালো-কে কালা বলার সাহস নিয়ে সাংবাদিকদেও পেশাগত দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে এনটিভি’র বর্তমান ও সাবেক সহকর্মিরা মোসাদ্দেক আলীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ ছাড়াও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে সভাপতি মনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এসময় ক্লাব সদস্য রিমন ইসলাম, এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইমরান আনসারী, রওশন হক, দিদার চৌধুরী ও পুলক মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।