নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কে এবিসিডিআই আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, এখনো দেশে এবং প্রবাসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের শান্তি মিশনের কর্মরত বাংলাদেশী সৈনিকদের নিয়েও ষড়যন্ত্র চলছে। গত ১৮ জুন বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের শেফ মহল রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ড. প্রদীপ রঞ্জন কর এবং পরিচালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আলিহাসান কিবরিয়া অনু।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি এক্টিভিস্ট মুজাহিদ আনসারী, মিথুন আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আনোয়ার বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসাইন, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলিহাসান কিবরিয়া অনু বলেন, আমেরিকা বাংলাদেশ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ নিউইয়র্কে অবস্থিত একটি অলাভজনক এবং নির্দলীয় সংস্থা। ২০০৪ সালে শিক্ষা ও গবেষণামূলক অনেকগুলো কাজ হাতে নিয়ে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এটি দীর্ঘদিন যাবৎ অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে বাংলাদেশ সম্প্রদায় এবং মূলধারার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ করে আসছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমাদের জন্মভূমি, আমাদের স্বদেশ! দেশে যখন সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। তখন দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার ছিল না। দেশের মানুষ গণতন্ত্র ও নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। সে সময় বিদেশ থেকে এই সংগঠনের নেতৃত্বে অনেকগুলো সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে মানুষের মাঝে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। সেই সময়ের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না করে প্রায় ৭০০ দিন পর ১৮ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা করে। সে নির্বাচন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অহিংস, স্বচ্ছ হবে কিনা? তা নিয়ে নানান প্রশ্ন দেখা দেয়। সে সময় এবিসিডিআই বাংলাদেশে ’অবাধ, সুষ্ঠু, অহিংস, স্বচ্ছ এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের’ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করেছিল। সেমিনারে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় যথাযথ পদ্ধতি এবং মনিটরিং সেট আপের উপর জোর দেয়া হয়েছিল, যাতে নির্বাচনের ফলাফলগুলি বাংলাদেশ ও বিদেশি জনমতের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সেসময় মার্কিন কংগ্রেসেও অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ নির্বাচনের বিষয়ে একটি বিল পাস হয়েছিল।
সেমিনারে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেলিস্টদের দল নির্বাচনের সমস্যা এবং বাধা চিহ্নত করার চেষ্টা করবে এবং সেমিনারে তাদের সুপারিশ উপস্থাপন করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় সেমিনারে অতিথি ও কি নোট স্পিকার এবং বৃটিশ পালামেন্ট সদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকী অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ইউএস কংগ্রেসওম্যান ইভেট ক্লাক অতিথি হিসাবে সেমিনারে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের মসৃণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য অমূল্য দৃষ্টিভঙ্গি, বিশ্লেষণাত্মক মতামত এবং গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে আমাদের সমৃদ্ধ করেছিলেন। ঐ সেমিনারের সুপারিশসমূহ সেই সময় দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। উন্নয়নের মহাসড়কে, এশিয়ার টাইগার, বিশ্বে উন্নয়নের মডেল এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী ও উন্নয়নশীল একটি দেশ। এ বছর প্রায় ৭ লক্ষ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষিত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ অনেক দুর এগিয়েছে। অথচ দেশ-বিদেশে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি আরো বলেন, দেশে গত সাধারণ নির্বাচনের আগে আমেরিকা ও ইউএনকে সত্য-মিথ্যা অনেক তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের সাথে আমেরিকার ও ইউএন’র সম্পর্ক বিনষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এখনো ইউএন’র শান্তি মিশনে বাংলাদেশের সৈনিকরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। ইউএন’র শান্তি মিশনে বাংলাদেশ নিয়েও ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশে এক শ্রেণীর আমলা, ব্যাঙ্কার, একাডেমিশিয়ান, রাজনীতিবিদ দেশের অর্থ আত্মসাৎ এর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি রুগ্ন করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। দেশের অর্থ আত্মসাৎকারী, জনপ্রতিধি হ্ত্যাকারী খুনীরা আমেরিকায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিরাও আমেরিকার বিভিন্ন শহরে নির্ভয়ে বসবাস করছে। আমেরিকা আজ খুনি, ষড়যন্ত্রকারী, দুনীতিবাজ, অর্থ আত্মসাৎকারীদের অভয় অরণ্যে পরিণত হয়েছে।