নিউইয়র্কে জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপিকে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখার সংবর্ধনা
নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। ১ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসে মুনলাইট গ্রীল রেস্টুরেন্টের মিলনায়তনে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন যুক্তরাষ্ট্র শাখা এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের আরো অনেক অনুষ্ঠানে আমি এসেছি। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে, সভাপতি হবার পর যখনই নিউইয়র্কে এসেছি আপনাদের সাথে মিলিত হয়েছি। সমাবেশে কথা বলেছি।
জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি বলেন, আমরা যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের শেকড় কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের আদর্শ হলেন বঙ্গবন্ধু। আমাদের আদর্শ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যে চেতনায় আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র হাতে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, একাত্তরের ৭ মার্চের যাদুকরি বক্তব্যে সারা বাংলার সাধারণ মানুষেরাও মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। আর এটিই হচ্ছে আমাদের মূল শেকড়। আর আপনারা যারা এই প্রবাসে আছেন, তাদের প্রত্যেকের হৃদয়েই কিন্তু একখণ্ড বাংলাদেশ বাস করছে। সে তাগিদেই অনেক কিছু ত্যাগ করে আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন ও ধারণ করছেন, এই চেতনাকে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ করছেন, এটি আসলেই অনেক বড় ব্যাপার। দেশকে ভালো না বাসলে এটা সম্ভব হতো না।
এই সংসদ সদস্য বলেন, যারা সত্যিকার অর্থে দেশের জন্যে নিবেদিত, তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী চলমান উন্নয়ন অভিযাত্রা ত্বরান্বিত করতে কাজে লাগাচ্ছেন। আমি মনে করি যে, আমাকে তিনি সংসদ সদস্য মনোনীত করে সাংবাদিকদেরকেই সম্মানীত করেছেন, সাংবাদিক সমাজকে মূল্যায়ন করেছেন, বিশেষ এক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। এজন্যে দেশ ও প্রবাসের সকল গণমাধ্যম কর্মীর পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি কন্সাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদেরকে আমার সহকর্মী হিসেবে স্ট্যাকহোল্ডার হিসেবে পাশে রাখতে চাই। আমরা যারা মানুষের সেবার দায়িত্বে আছি, তাদের সাথে গণমাধ্যমের একটি সুন্দর সম্পর্ক থাকা খুবই জরুরি। কারণ আমরা যে কাজগুলো করছি তা গণমানুষের কাছে পৌঁছানো অথবা আমরা যদি কোন ভুল করে থাকি সেগুলোর শোধরানোর অভিপ্রায়ে পয়েন্টআউট করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সে দৃষ্টিকোণ থেকেই আমরা কাজ করছি। নাজমুল হুদা সংসদ সদস্যা ফরিদা ইয়াসমিনকে নিউইয়র্ক কন্স্যুলেট পরিভ্রমণের অনুরোধ জানান।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের হ্যাড অব চ্যান্সেরী শুয়েব আব্দুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন এবং সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ-৭১ এর কর্মকান্ডে নিউইয়র্কের অনেকে সময় দিচ্ছেন এবং সংসদ সদস্যও উৎসাহিত করছেন। পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এসেছেন বলে সংসদ সদস্যকেও গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এসব সংগঠন টিকে থাকলেই বিদেশের মাটিতে আমাদের চেতনা, আমাদের ঐতিহ্য অটুট থাকবে।
কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ইঞ্জিনিয়ার মো. ফজলুল হক বলেন, আমরা আশা করছি আপনার বিচক্ষণতাপূর্ণ কর্মকান্ডে বাংলাদেশ তার অভীষ্ঠ লক্ষ্যে উপনীত হবে। এ সময় তিনি ঢাকা এয়ারপোর্টে প্রবাসীদের হয়রানি চিরতরে অবসানে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন হোস্ট সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের মিয়া। তিনি তাঁর সমাপনী বক্তব্যে ফরিদা ইয়াসমিনের মত সাদামনের মানুষকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে মনোনীত করার জন্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাস। তিনি বলেন, ফরিদা ইয়াসমিনরা জীবনের পুরোটা সময় ব্যয় করেছেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত থেকে। বাকিটা জীবন গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্বে শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ রচনায়ও অপরিসীম ভূমিকা পালন করবেন বলে আশা করছি।
‘প্রিয় মানুষ ফরিদা ইয়াসমিন এমপিকে নিউইয়র্কে অভিনন্দন-শুভেচ্ছা’ ব্যানারে এ অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা ও পরিচালনায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কম্যুনিকেশন্স ডাইরেক্টর বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ এর নারী বিষয়ক সম্পাদক ও বহ্নিশিখা সঙ্গীত নিকেতনের প্রধান সবিতা দাস, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সুব্রত তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, ব্রুকলীন কম্যুনিটি বোর্ড-১২ এন নবনির্বাচিত সেক্রেটারি মামুনুনুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিব রহমান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ ভোরে রোম থেকে নিউইয়র্কে এসেছেন ফরিদা ইয়াসমিন। ব্যক্তিগত সফরে তিনি ৬ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে থাকবেন।