লুৎফর রহমান রিটন : পঁয়ত্রিশ বছর আগে, ১৯৮৮/৮৯ সালে শাহাদাত চৌধুরীর সম্পাদনায় দৈনিক বাংলা ভবন থেকে 'সাপ্তাহিক বিচিত্রা'র সহোদর প্রকাশনা হিশেবে 'আনন্দ বিচিত্রা' নামে একটি পাক্ষিক পত্রিকা বেরুতো। পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা থেকেই শিল্পী রফিকুন নবীর কার্টুন এবং আমার ছড়া দিয়ে সাজানো থাকতো একটি পাতা। লেখাই বাহুল্য, সেই পাতাটা ছিলো পাঠকপ্রিয়তায় শীর্ষে। চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশনের তারকা শিল্পীদের কেরিক্যাচারের সঙ্গে আমার ছন্দোময় স্যাটায়ার পাতাটিকে জনপ্রিয় করেছিলো সকল শ্রেণির পাঠকের কাছে। নায়করাজ রাজ্জাক ছিলেন আমাদের প্রথম শিকার। এরপর প্রতি সংখ্যায় নবী ভাই আর আমার সম্মিলিত রসিকতার তীরে বিদ্ধ হতেন একেকজন প্রিয়তম তারকা। মনে আছে, এক সংখ্যায় জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ ছিলেন আমাদের টার্গেট। রফিকুন নবীর দুর্দান্ত কার্টুনের সঙ্গে জুয়েল আইচকে নিয়ে আমার ছড়ার প্রথম স্তবকটি ছিলো এরকম--খাইছে রে ভাই খাইছে/আইছে জুয়েল আইচে/পাবলিকেরা দেইখা তারে ভীষণ মজা পাইছে...।
নিউইয়র্ক রাইটার্স ক্লাবের ব্যবস্থাপনায় শো টাইম মিউজিকের আয়োজনে জ্যামাইকার মেরি লুইস একাডেমি মিলনায়তনে গেলো ০৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হুমায়ূন আহমেদ সম্মেলন ও বইমেলায় অতিথি হিশেবে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ এবং প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম। আমন্ত্রিত অতিথি হিশেবে কানাডা থেকে অংশ নিয়েছিলাম আমিও। ছিলেন ডক্টর নূরুন নবী এবং লেখক দম্পতি জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত ও পূরবী বসু।
পঁয়ত্রিশ বছর আগে জুয়েল আইচকে নিয়ে আনন্দ বিচিত্রায় লেখা আমার ছড়াটার সেই সূচনা-চরণসমূহ ফের উদ্ধৃত করি--খাইছে রে ভাই খাইছে/ আইছে জুয়েল আইচে/পাবলিকেরা দেইখা তারে ভীষণ মজা পাইছে...।
পাবলিকেরা মজা পাইবো কি আমারে পাইয়া জুয়েল আইচ কেমন মজা পাইছেন আর জুয়েল আইচরে পাইয়া আমি কেমন মজা পাইছি তার নমুনা তো এই ছবিতেই দৃশ্যমান হইয়া আছে!
আশি এবং নব্বুইয়ের দশকে জুয়েল আইচের গোঁফ ছিলো। তখন আমাদের দুজনের চেহারার সাদৃশ্য ছিলো বিস্ময়কর। জুয়েল আইচ ভেবে কেউ কেউ আমার অটোগ্রাফও চাইতো তখন!
ভালো থাইকেন প্রিয় জুয়েল ভাই।
আবার দেখা হবে।
(লুৎফর রহমান রিটনের পেইজবুক থেকে নেয়া।)
অটোয়া ১০ অক্টোবর ২০২৩