Today Is- Tuesday-03 Dec 2024

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন রোববার : ১৯ পদে সেলিম-আলী’ ও ‘রুহুল-জাহিদ’ প্যানেলের ৩৭ প্রার্থী; ৫ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন :

নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের ‘আমব্রেলা’ সংগঠন হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের দ্বি-বার্ষিক (২০২৪-২০২৫) নির্বাচন আগামী ২৭ অক্টোবর রোববার। এবারের নির্বাচনে মোট সদস্য হচ্ছে প্রায় ১৯ হাজার। এরমধ্যে আজীবন সদস্য ৮৫৩জন।
এই নির্বাচনে ‘রুহুল-জাহিদ’ ও ‘সেলিম-আলী’ প্যানেল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এই দুই প্যানেল থেকে সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ১৯টি পদে ৩৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।‘সেলিম-আলী’ প্যানেলের একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এদিকে নির্বাচন ঘিরে ভোট প্রার্থনায় প্যানেল দুটির প্রার্থীরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন, করছেন সভা-সমাবেশ, চলছে শেষ মূহুর্তের প্রচারণা। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে নানাভাবে প্রচারণা। বলা যায় সোসাইটির নির্বাচনী প্রচারণা এখন তুঙ্গে। ইসি জানিয়েছে এবারও সিটির ৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে এবং মেশিনে ভোট নেয়া হবে। খবর ইউএনএ’র।
এদিকে বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন ঘিরে কমিউনিটিতে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। জ্যামাইকা থেকে ম্যানহাটান আর ব্রুকলীন থেকে ব্রঙ্কস মাঝে ওজনপার্ক, জ্যাকসন হাইটস, এস্টোরিয়া, ব্রঙ্কস প্রভৃতি এলাকায় দিন-রাত ছলছে উভয় প্যানেলের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। তবে সন্ধ্যাপর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত জমে উঠছে নির্বাচনী সভা, বৈঠক। পাশাপাশি চলছে রং বে রং-এর পোস্টারিং আর স্ট্রীট জনসংযোগ। চলছে সর্বশেষ সভা-সমাবেশ। কোথাও কোথাও নির্বাচনী সমাবেশ ‘জনসভায়’ রূপ নিচ্ছে। গত ১৯ অক্টোবর, শনিবার সন্ধ্যায় ‘রুহুল-জাহিদ’ প্যানেল ব্রুকলীনের রাজপথে প্যান্ডেল তৈরী করে দেশীয় স্টাইলে সোসাইটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ‘নির্বাচনী জনসভা’ করেছে। যা অনেকেরই দৃষ্টি কেড়েছে। শীতের ঠান্ডা উপক্ষো করে এতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর অংশগ্রহণ ছিলো লক্ষণীয়।
নির্বাচন বিষয়ে প্রধান জামাল আহমেদ জনি ইউএনএ প্রতিনিধিকে জানান, ৫টি ভোট কেন্দ্রে এবারের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। কুইন্সে একাধিক ভোট কেন্দ্র ছাড়াও ব্রুকলীন, ব্রঙ্কস আর ওজনপার্কে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, অতীতের মতো এবারের নির্বাচনও ‘ফ্রি এন্ড ফেয়ার’ হবে। এজন্য কমিশন সকল প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। চলছে পুলিং কর্মকর্তা নিয়োগ সহ অন্যান্য প্রস্তুতি। সবমিলিয়ে বলতে পারি সকল প্রস্তুতি-ই সম্পন্ন। উল্লেখ্য, ৭ সদস্যের কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন- আব্দুল হাকিম মিয়া, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, আব্দুল মান্নান, মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান বাদল ও আহবাব চৌধুরী খোকন।
উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে সোসাইটির ভোটার ছিলেন ২৭ হাজার ৫৫০জন। অতীতের মতো এবারের নির্বাচনেও বৃহত্তর সিলেটবাসী ও নোয়াখালীবাসী ছাড়াও চাঁদপুরবাসী, চট্টগ্রামবাসী ও মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুরবাসী সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনগুলো নেপথ্যে ভূমিকাও গণ্য হচ্ছে। ফলে সোসাইটির নির্বাচন ঘিরে দৃশ্যত বিভক্ত হয়ে পড়েছে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে চলছে পাল্টাপাল্টি সভা-সমাবেশ, বক্তৃতা আর পরষ্পর বিরোধী প্রচারণা।
বাংলাদেশ সোসাইটি ও জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম ও সোসাইটির সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ‘সেলিম-আলী’ প্যানেল। এই প্যানেলে রয়েছে সোসাইটির বর্তমান, সাবেক কর্মকর্তা ও নতুন মুখ।
‘সেলিম-আলী’ প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- আতাউর রহমান সেলিম, সিনিয়র সহ সভাপতি- মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ সভাপতি- কামরুজজামান কামরুল, সাধারণ সম্পাদক- মোহাম্মদ আলী, সহকারী সাধারণ সম্পাদক- আবুল কালাম ভুইয়া, কোষাধ্যক্ষ- মফিজুল ইসলাম ভুইয়া রুমী, সাংগঠনিক সম্পাদক- ডিউক খান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- অনিক রাজ, প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক- রিজু মোহাম্মদ (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত), সমাজকল্যাণ সম্পাদক- জামিল আনসারী, সাহিত্য সম্পাদক- মোহাম্মদ এ আখতার বাবুল, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক- আশরাফ আলী খান লিটন, স্কুল ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- হাসান জিলানী এবং কার্যকরী সদস্য যথাক্রমে মোহাম্মদ সাদিক, আবুল কাশেম চৌধুরী, মনসুর আহমেদ, আল হারুন, জাহাঙ্গীর সোহরাওয়ার্দী ও হাসান খান।
নির্বাচন প্রসঙ্গে আতাউর রহমান সেলিম ও মোহাম্মদ আলী বলেন, সোসাইটির নির্বাচনে আমাদের প্রতিশ্রুতি কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ করে মূলধারায় শক্ত অবস্থান প্রতিষ্ঠা, নতুন প্রজন্মের সাথে সোসাইটির সেতু বন্ধন সুদৃঢ় করে গণমুখী, কল্যাণকর ও জবাবহিতামূলক সার্বজনীন সংগঠনে রূপান্তর করা।
অপরদিকে, সোসাইটিতে পরপর দুইবারের নির্বাচিত বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী ও বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টুর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ‘রুহুল-জাহিদ’ প্যানেল। সোসাইটির বর্তমান সভাপতি ও গ্রেটার নোয়াখালী সোসাইটি ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুর রব মিয়া সহ সোসাইটির বর্তমান, সাবেক কর্মকর্তা ও নতুন মুখ নিয়ে গঠন করা হয়েছে ‘রুহুল-জাহিদ’ প্যানেল।


‘রুহুল-জাহিদ’ প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- রুহুল আমিন সিদ্দিকী, সিনিয়র সহ সভাপতি- ফারুক চৌধুরী, সহ সভাপতি- আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক- জাহিদ মিন্টু, সহ সাধারণ সম্পাদক- সরওয়ার খান বাবু, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ নওশেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক- মোহাম্মদ এস সাদী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মনিকা রায় চৌধুরী, সমাজসেবা সম্পাদক- নাদির আহমেদ আইয়ুব, সমাজসেবা সম্পাদক- রোমানা আহমদ, ক্রিড়া সম্পাদক ও আপ্যায়ন সম্পাদক- আলমগীর হোসেন, স্কুল ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক- শাহনাজ হোসেন। কার্যকরি কমিটির সদস্য পদের প্রার্থীরা হলেন- মোহাম্মদ রব মিয়া, মোহাম্মদ তাজু মিয়া, এমডি এন ইসলাম, রফিকুল ইসলাম ডালিম ও সাইফুল ইসলাম। পরিচয় পর্ব শেষে সকল প্রার্থী অতি সংক্ষেপে নিজেদের নাম ও পরিচয় তুলে ধরেন। এই প্যানেলের ট্রাম্প কার্ড হিসেবে দেখা হচ্ছে তিন নারী প্রার্থীকে। এদের মধ্যে সমাজসেবা সম্পাদক রোমানা আহমদ হচ্ছেন বাংলাদেশ সোসাইটির মরহুম সভাপতি কামাল আহমেদের কন্যা।
নির্বাচন প্রসঙ্গে রুহুল আমীন সিদ্দিকী ও জাহিদ মিন্টু বলেন, সবার সহযোগিতায় ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি ও মূলধারায় অবস্থান সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে জনকল্যাণে পরিক্ষিত সৎ ও নিষ্ঠাবান ‘বাংলাদেশ সোসাইটি ভবন ও কমিউনিটি সেন্টার’ প্রতিষ্ঠাই আমাদের প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।

CATEGORIES
Share This