নিউইয়র্কে সেরা ১০০ জনের তালিকায় ৩ বাংলাদেশি শাহানা, মাফ মিসবাহ ও তানভির
নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্ক সিটিতে ৮০০ ভাষা-ভাষী মানুষের মধ্যে রাজনীতি-প্রশাসন-সমাজকর্মে চলতি বছরের সেরা ১০০ এশিয়ানের তালিকায় স্থান পেয়েছেন ৩ বাংলাদেশি-আমেরিকান। তারা হলেন নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের ইতিহাসে প্রথম মুসলমান নারী এবং প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফ, শ্রমিক নেতা মাফ মিসবাহ উদ্দিন ও তানভির চৌধুরী।
নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রুকলীনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এলাকায় চট্টগ্রাম সমিতির নেতা এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কান্ডারিদের অন্যতম মোহাম্মদ হানিফের কন্যা শাহানা হানিফ। যার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নিউইয়র্কে। তবুও প্রাঞ্জল ভাষায় তিনি বাংলা উচ্চারণ ও কথা বলে গোটা কমিউনিটিতে বিশেষ অবস্থানে অধিষ্ঠিত শাহানা আছেন ১৭ ক্রমিকে। অভিবাসী সমাজের অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে আপসহীন শাহানা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূলের সংগঠকদেরও অন্যতম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।
অপরদিকে, ৩৪ ক্রমিকে রয়েছেন নিউইয়র্ক সিটিতে সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়নের (ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল ৩৭) ট্রেজারার এবং ২০০০ সাল থেকে এই সিটির অ্যাকাউন্ট্যান্ট, স্ট্যাটিসটিক্স অ্যান্ড এ্যাকচুয়ারিজ ইউনিয়নের (লোকাল১৪০৭) প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে আসা নোয়াখালীর সন্তান মাফ মিসবাহ উদ্দিন। তার নেতৃত্বে আমেরিকায় গড়ে ওঠা ‘এলায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান লেবার’ তথা অ্যাসাল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্কিন কংগ্রেস, স্টেট সিনেট, স্টেট অ্যাসেম্বলি, সিটি কাউন্সিলে বাংলাদেশি তথা দক্ষিণ এশিয়ান প্রার্থীদের বিজয়ে অপরিসীম ভূমিকার পাশাপাশি দক্ষিণ বাংলাদেশিদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে উজ্জল দৃষ্টান্ত রেখেছেন।
এই তালিকায় সবচেয়ে কম বয়সী বাংলাদেশি আমেরিকান তানভির চৌধুরী রয়েছেন ৯৭ ক্রমিকে। ব্রঙ্কসের বাসিন্দা তানভির লেখাপড়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাথে জড়িত হয়ে ইতিমধ্যেই মূলধারা ও প্রশাসনে অনেকের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৩ এর বিশেষ নির্বাচনে বিজয়ী টম সোউজির ভোট ব্যাংকে বাংলাদেশি তথা দক্ষিণ এশিয়ানদের জোরালোভাবে যুক্ত করতে অপরিসীম ভূমিকা পালন করেছেন। তার নেতৃত্বে কাজ করছে ‘দ্য সী ব্লু নিউইয়র্ক’ নামক একটি সংগঠন। এটি মূলত অভিবাসী সমাজ ও নতুন প্রজন্মের ভোটারকে মার্কিন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততায় কাজ করছে।
উল্লেখ্য, ‘সিটি অ্যান্ড স্টেট নিউইয়র্ক’ নামক একটি সংস্থা সম্প্রতি ‘দ্য ২০২৪ পাওয়ার অব ডাইভার্সিটি : এশিয়ান ১০০’ তালিকাটি প্রকাশ করেছে। রাজনীতি, সমাজ, সম্প্রদায় তথা বহুজাতিক সমাজের সামগ্রিক কল্যাণে নিবেদিতদের ওপর গভীর পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণার ভিত্তিতে শত প্রভাবশালীর এ তালিকায় এশিয়ান-আমেরিকান লিডার হিসেবে বিশেষ স্থানে রাখা হয়েছে কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এবং নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমারকে।
আরও উল্লেখ্য যে, নিউইয়র্ক সিটিতে ৮ শতাধিক ভাষা-ভাষীর মানুষের মধ্যে নবম বৃহত্তম হচ্ছে বাংলা ভাষা তথা বাঙালিরা। সংখ্যাগতভাবে ৩ লাখের অধিক বাংলা ভাষী বাস করলেও নিজেদের মধ্যে ঐক্যের নিদারুণ সংকট চলায় মার্কিন রাজনীতিতে যেভাবে এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল, তা এখনো দৃশ্যমান হতে পারেনি। সামনের নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে কমিউনিটিভিত্তিক সে অনৈক্য কেটে যাবে বলে সকলে আশা করছেন