নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক : বাংলাদেশের রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত শতভাগ রপ্তানিকারক জুতা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ব্লিং লেদার প্রোডাক্টস। ব্লিং লেদার প্রোডাক্টস্ লিমিটেডে আনন্দ উৎসব ও মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর, রবিবার দিনব্যাপী নানা আয়োজনে পালিত হয় আনন্দ উৎসব। দুই হাজারের অধিক শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তারদের নিয়ে ব্লিং লেদার প্রোডাক্টস্ চত্বরের আয়োজনটি ছিল সত্যিই আনন্দঘন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্লিং লেদার প্রোডাক্টস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোঃ হাসানুজ্জামান হাসান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী পরিচালক খাজা রেহান বখত, সিএফও মোঃ কেরামত আলী, মহা ব্যবস্থাপক এম. এম. খালিদ আহসান প্রমুখ। বর্ণিল অনুষ্ঠানটিতে নিয়মানুবর্তিতা, কর্ম দক্ষতা ও অন্যান্য গুণাবলীর আলোকে বর্ষসেরা কর্মীর পুরস্কার প্রদান করা হয়৭ জন কর্মীকে।
মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয় খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শেষে বিতরণ করা হয় রাফেল ড্র ও পুরস্কার। রাফেল ড্র তে ১ম পুরস্কার ৫০ ইঞ্চি স্মার্ট টিভি পেয়েছে সুইং বিভাগের কর্মী শ্রীমতি সুমিত্রা, ২য় পুরস্কার ২টি স্মার্টফোন পেয়েছে কর্মী মৌসুমী ও ময়না। ৩য় পুরস্কার ৫ টি কমফোর্ট এবং ৪র্থ পুরস্কার ১০টি মোবাইল ফোন সহ আরো অনেক আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হয়। ব্লিং লেদার প্রোডাক্টস্ লিমিটেডর চেয়ারম্যান মোঃ হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানিতে ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। দক্ষ জনশক্তি ব্যবহার করে ফুটওয়্যার খাতে আমরা গুনগত মানের পণ্য তৈরি করছি। ভবিষ্যতে রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করছি। সেই সাথে উত্তরাঞ্চলে আরও ব্যাপক কর্মংস্থানের ব্যবস্থা হবে, ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গের অবহেলিত জনপদ রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা। তারই একটি প্রত্যন্ত গ্রাম ঘনিরামপুর। দরিদ্র এই জনবসতির মাঝে আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক জুতা তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন মোহাম্মদ সেলিম ও হাসানুজ্জামান হাসান ভাতৃদ্বয়। নীলফামারী জেলার বাসিন্দা এদের দু’জনই একসময় ছিলেন নিউইয়র্ক প্রবাসী। তাদের দু’জনেরই স্বপ্ন ছিলো অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া অনুন্নত এলাকা নীলফামারী ও রংপুরে শিল্পকারখানা গড়ে তুলে বেকার এলাকাবাসীর কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করা। এজন্য বেশ অনেক বছর পূর্বেই নীলফামারি ও রংপুরে প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন দেশের অন্যতম বৃহৎ দু’টি হিমাগার। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে গড়ে তুলেন ব্লিংলেদার প্রডাক্টস লিমিটেড। স্থানীয় ইকোনমিক জোনের কাছাকাছি ২লাখ বর্গফুট এলাকা জুড়ে ব্যক্তি-মালিকানাধীন এ প্রতিষ্ঠানটি ভিন্ন মাত্রার প্রতিবেশ সৃষ্টি করেছে এলাকায়। কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে দুই সহস্রাধিক মানুষের। যার সিংহভাগই নারী কর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দা।
ব্লিং লেদার প্রডাক্টসের তৈরী বিভিন্ন ধরণের জুতা অত্যন্ত উন্নতমানের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানীর মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ব্যাপক সুনাম কুঁড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশের প্রচলিত শিল্প আইনের সকল শর্ত মেনে এগিয়ে চলেছে ব্লিং লেদার প্রডাক্টস। শ্রমিক কর্মচারীদের সাথে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের নিবিড় সম্পর্ক সৃষ্টি করেছে এক ধরণের পারিবারিক পরিবেশ। এখানে কর্মরত সকলের শারীরিক ও মানসিক উৎকর্ষতা বিকাশের জন্য প্রায়শই আয়োজন করা হয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে সামনে রেখে ব্লিং লেদার প্রডাক্টসের আয়োজিত আনন্দ উৎসব পরিণত হয় মিলন মেলায়। উল্লেখ্য প্রতিষ্ঠানটির স্বপ্নদ্রষ্টা মোহাম্মদ সেলিম সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করেন। ছোটভাই হাসানুজ্জামান হাসান এখন হাল ধরেছেন প্রতিষ্ঠানটির। তিনি উত্তরবঙ্গ তথা বাংলাদেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে চান। যুক্তরাষ্ট্রে নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোক্তা হাসান। তিনি অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করছেন বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের তৈরী জুতার বাজারের বিস্তৃতি বাড়াতে।