যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে: নিউইয়র্কে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন (ভিডিও সহ)
নিউজ২৪ইউএসএ.কম, নিউইয়র্ক : বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ ভবিষ্যতে এটি আরও সুদৃঢ় হবে। নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়ার সাথে বাংলাদেশও একমত বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারও একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের সব চেষ্টা করে যাচ্ছে। নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় সোমবার লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, রাতের অন্ধকারে ব্যালট ঢুকানোর অভিযোগ করা হয়, কিন্তু কেউ প্রমাণ দেয় নাই। তাই আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বক্স তৈরি করেছি, যাতে দূর থেকে দেখা যায় ব্যালট বাক্সে কিছু আছে কিনা। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আইনের মাধ্যমে চলে। তারা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়। নির্বাচনে তারা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। সরকার চায় একটি ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার এবং ভায়োলেন্স মুক্ত নির্বাচন। এ জন্য সব দলের- মতের আন্তরিকতা দরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বিএনপি’র আমলে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোট করা হয়েছিলো, কিন্তু বর্তমানে ব্যায়োমেট্রিক পদ্ধতির কারণে আঙ্গুল দিলেই ছবিসহ তথ্য চলে আসবে। ভুয়া ভোটের পসিবিলিটি আমরা কমিয়ে দিয়েছি। আমরা একটা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে দৃঢ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
প্রেস ব্রিফিংয়ের শুরুতে তিনি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, যা বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হচ্ছে বলে জানান।
জি-সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে কি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবারের বিয়োগান্ত ঘটনা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি পিতা, মাতাসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়েছি। তিনি ও তাঁর বোন শেখ হাসিনা দেশে ছিলেন না বলে বেঁচে আছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জো বাইডেনকে আরও বলেন, পরিবারের সবাইকে হারানোর পর তাঁর আর চাওয়া পাওয়ার কিছু নাই। দেশের ১৭ কোটি মানুষই তাঁর পরিবার। দেশের মানুষের চাওয়া পাওয়াই তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে বাংলাদেশের অনুরোধের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র এখনও কোন সাড়া দেয়নি বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, দারিদ্র ও ক্ষুধা নিরসনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা কলা-কৌশলের কারণে অতি দারিদ্রের হার ২০২২ সালে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে যা ২০০৬ সালে ছিলো ২৫.০১ শতাংশ। এবারের জাতিসংঘের অধিবেশনে ফ্রান্স-রাশিয়া-ভারত অংশ না নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন এটা ভালো দিক নয়, আমরা চাই বিশ্বের সব ক্ষমতাধর দেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলুক।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এবং হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী পিটার সিয়ার্তোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তিনটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের পার্শ্ব বৈঠকে উভয় মন্ত্রী এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
এগুলো হলো-অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি, ২০২৪-২৬ সালের জন্য স্টাইপেনডিয়াম হাঙ্গারিকাম প্রোগ্রামের কাঠামোর মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং ২০২৩-২৫ বছরের জন্য স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে হাঙ্গেরির সহযোগিতা কামনা করেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের উপর চাপ অব্যাহত রাখতে হাঙ্গেরির প্রচেষ্টা থাকবে বলে জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।