নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : সাঈদী ভক্ত' অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক পদ থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন খান শওকত। দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ মে শনিবার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ খান শওকতকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বলে দলীয় সূত্র জানায়। সূত্রমতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ১৭ এপ্রিল ২৫ জনকে কার্যনির্বাহী কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করে নেন। তার মধ্যে খান শওকত ছিলেন অন্যতম। তিনি পুনর্গঠিত কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ ছিল, খান শওকত জামাত এবং বিএনপি ঘেষা সাম্প্রদায়িক মানুষ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তিনি পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে সাম্প্রদায়িকতার কথা ছড়িয়েছেন। গণমাধ্যম কর্মীর তথ্যের ভিত্তিতে তাকে উপ প্রচার সম্পাদক পদ হতে অব্যাহতি দিয়েছি।
বহিষ্কৃত খান শওকত বলেন, আমি নোংরা রাজনীতির শিকার। আমার সঙ্গে ঈর্ষাবসত এ কাজ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাকে নিয়ে গত ৪/২৪/২০২৪ তারিখে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন প্রচার সম্পাদক আব্দুল হামিদের পাঠানো নিউজ যখন সাপ্তাহিক ঠিকানায় ওঠে যে উপ প্রচার সম্পাদক খান শওকতের মনোনয়ন “সাময়িক স্থগিত”! তখনই আমি দলের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানকে জানিয়েছিলাম। তিনি লিখে জানিয়েছিলেন এটা অপপ্রচার এবং অসত্য সংবাদ। কিন্তু আজ দেখছি বহিস্কার! আমিতো অবাক! সংগঠন কি এভাবে চলে? আব্দুল হামিদের পাঠানো প্রেস রিলিজ আমাকে পাঠিয়েছেন নতুন উপ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেক। তাতে লেখা আমার মনোনয়ন সাময়িক স্থগিত। সত্যিই যদি সাময়িক স্থগিতাদেশ হয়ে থাকে, তা বহিস্কার হয় কিভাবে? যদি বহিস্কার না হয় তাহলে যে বা যারা মিথ্যা সংবাদ প্রচার করছেন তারা কি দলের নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন না?
খান শওকত বলেন, গত রোববার (০৫/০৫/২০২৪) ঘুম থেকে উঠে তরুন সাংবাদিক তফাজ্জল লিটনের (ফোন- 646- 323- 3223) করা একটা নিউজটা দেখে বিশ্মিত হলাম। নিউজে সে লিখেছেঃ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ থেকে সাঈদী ভক্ত খান শওকতকে বহিস্কার করা হয়েছে! নিউজটা পড়ে আমিতো হতবাক। আমি সাঈদী ভক্ত হলাম কবে? গতকাল (০৫/০৪/২০২৪) সে আমাকে ফোন করেছিলো, আমি তার প্রশ্নের যা উত্তর বলেছি নিউজে তা উল্টিয়ে সম্পূর্ন মিথ্যা লেখা হয়েছে। পহেলা বৈশাখ-কে আমি হিন্দুয়ালী বলবো কেন? আমি নিজেইতো বৈশাখী উৎসব পালন করি সবসময় এবং বহুবার গাঙচিল থেকে এ উৎসবের আয়োজনও করেছি। এবছরের টাইমস স্কয়ারের বৈশাখী উৎসবে এবং বিভিন্ন নিউইয়র্কের এলাকার বৈশাখী উৎসবে প্রবাসের সবাই যেন অংশ নেন সে বিষয়ে আমার ফেসবুকে প্রচারও করেছি। এখনো সেসব লেখা আমার ফেসবুকে আছে। মিথ্যাচারের একটা সীমা থাকা উচিত। আব্দুল হামিদ এবং তোফাজ্জল লিটন বানোয়াট নিউজ ছেপেছে। এটা অন্যায়। এসবে দলে ক্ষতি হয়। আমি এমন অপ-সাংবাদিকতার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমি উপ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেককে প্রশ্ন করেছি, আপনারা জানেন, ১৯৯০ সাল থেকে আমি নিউইয়র্কে আছি। ম্যাজিক দেখাই, নাটক লিখি, অভিনয় করি, আবৃত্তি করি, চলচ্চিত্র বানাই, বিভিন্ন সংগঠন করি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে নাটক করি, সেমিনার করি। আমি যা যা করি সবসময় নিউজ হয়। আমার কাছে সেসব নিউজ কাটিং আছে, আপনাদের কাছেও থাকতে পারে। আপনারা কেউ কি কখনো দেখেছেন আমাকে জামাত বা সাঈদীর পক্ষে কোথাও কোন কাজে বা কোথাও কোনকিছু লিখতে বা বলতে? উত্তরেমালেক বলেছেন গত ৩৩ বছরে তিনি আমাকে কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাইরে কোথাও কিছুতে দেখেননি।
খান শওকত বলেন, ১৯৯০ সালে আমি নিউইয়র্কে আসি। ১৯৯৩ সাল থেকে প্রায় তিন দশক মোট ৩৫ টা নাটক লিখেছি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। নাটকগুলো বাংলাদেশ-ভারত-আমেরিকায় মন্চস্থ হয়। ঢাকার দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রায় ১লা এপ্রিল থেকে প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে নাটকগুলো প্রকাশ হচ্ছে। সেসব নাটকের সংলাপগুলো রাজাকার বিরোধী এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পক্ষে রচিত। প্রবাসীরা আমার আদর্শ সম্পর্কে জানেন। গত ১ যুগ যাবত আমি যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ সভাপতিসহ অন্যান্য অনেকগুলো সংগঠনে কাজ করছি। আমার আদর্শিক পরিচয় সবাই অবগত। তাই আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যারা নিউজ করলেন, নিজের বিবেকের কাছে তারা দায়ী থাকবেন। সংগঠন মানে হলো কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ এলে সেটা তাকে জানাতে হয়, তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হয়, অভিযোগের সত্যতা প্রমান হতে হয়, তারপর শাস্তি দিতে হয়। এসবের কিছুই না করে দলের নামে যারা মনগড়া নিউজ ছড়িয়ে দিলেন, তারা আমার বা আমার পরিবারের সদস্যদের মান সম্মানের কথা বা দলের সম্মানের কথা ভাবলেন না, তাদের এমন অসাংগঠনিক কাজের বিচার না হলে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এ সংগঠনে গনতান্ত্রিক ও গঠনতান্ত্রিক চর্চা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সভাপতি শ্রদ্ধাভাজন নেতা ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং সুযোগ্য সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের নেতৃত্বের প্রতি আমি আস্থাশীল। আমার বিশ্বাস তারা এ বিষয়টার দ্রুত সমাধান করবেন যা হবে সবার জন্য মঙ্গলজনক।