নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনে পুলিশের গুলি ও বর্বরোচিত হামলা এবং সহিসংতায় সাধারণ শিক্ষার্থী এবং নিরীহ মানুষের প্রাণহানি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সামনে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বুধবার ‘সেভ বাংলাদেশ’ এর ব্যানোরে বেলা তিনটা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এই কর্মসূচী চলে। বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা মাথায় জাতীয় পতাকা আর লাল কাপড় পড়ে তাদের দাবি-দাওয়া সম্বলিত প্লেকার্ড নিয়ে গগণ বিদারী শ্লোগান তুলেন। এসময় তারা শেখ হাসিনা সরকারেরও পদত্যাগ দাবি করেন। বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশি-আমেরিকান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ নিউইর্কের সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ নেন। তারা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
সমাবেশে সেভ বাংলাদেশ-এর নিউইয়র্ক চ্যাপ্টারের সমন্বয়কারী ডা. মাসুদুর রহমান, প্রেসিডেন্ট জাহিদ খান, সমন্বয়কারী সৈয়দ আল আমীন রাসেলসহ অন্যান্যের মধ্যে ডা. তুহিন আনোয়ার, ইমরান আনসারী, রওশন হক, রাব্বী সৈয়দ, কনা কামরুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এই সমাবেশেস সাথে সংহতি প্রকাশ করে যোগ দেন সঙ্গীত শিল্পী বিপ্লব।
বিক্ষোভ সমাবেশে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা এবং জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সঙ্গীত শিল্পী বেবী নাজনীন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য গিয়াস আহমেদ ও জিল্লুর রহমান জিল্লু, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, জসিম উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, এবাদ চৌধুরী, বদরুল হক আজাদ, নিউজার্সী বিএনপি নেতা আলহাজ সৈয়দ জুবায়ের আলী, কেন্দ্রীয় যুবদলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবু সাঈদ আহমদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাবেক সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম, যুবদল নেতা আতিকুল হক আহাদ, মিজানুর রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ যোগ দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। তারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ করে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান।
বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচির এক পর্যায়ে জাতিসংঘ ভবনে মহাসচিব বরাবর ‘সেভ বাংলাদেশ’-এর পক্ষ থেকে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট জাহিদ খান ও অন্যতম সমন্বয়কারী সৈয়দ আল আমীন রাসেল বিকেল সোয়া ৪টার দিকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে কোটা আন্দোলনের চলমান পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি এই আন্দোলনে ছয় বছরের শিশু ও ফিফথ গ্রেডের শিক্ষার্থী ছাড়াও ১১ বছরের বালকসহ ২৬৬ জন নিহত (এ পর্যন্ত) এবং বাংলাদেশে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরা হয়। স্মারকলিপিতে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতিংঘের দায়িত্বশীল ভ‚মিকা কামনা, সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যাকাÐের বিচার এবং নোবেল পুরষ্কার জয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস প্রস্তাবিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনের একটি অবাধ নির্বাচনের দাবিসহ ৫ দফা দাবির কথা উল্লেখ করা হয়।
এদিকে জাতিসংঘের সামনের বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচীর পর বুধবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে সেভ বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে জাতিসংঘের কর্মসূচী সফল করায় প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং আগামীতে আরো কর্মসূচী পালন করা হবে বলে জানানো হয়।