নিউইয়র্ক স্টেটের বাফেলোতে দুই বাংলাদেশির ঘাতক সন্দেহে আটক যুবক ড্যাল ও কিউমিংস রিমান্ডে
নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : নিউইয়র্ক স্টেটের বাফেলোতে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক ৩১ বছর বয়সী ড্যাল ও কিউমিংস-কে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছেন বাফেলোস্থ এরিক কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি মাইকেল জে কীন।
সোমবার অপরাহ্নে বাফেলো সিটি মেয়র বাইরেন ডাব্লিউ ব্রাউন, বাফেলো পুলিশ কমিশনার জোসেফ গ্রেমাগলিয়াকে পাশে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত যুবকের কাছে একটি অটোমেটিক রাইফেল পাওয়া গেছে। সেটি বেআইনীভাবে তার দখলে ছিল। তা পরীক্ষা করা হচ্ছে ঐ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা।
ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আরও জানান, ড্যাল ও কিউমিংস-এর বিরুদ্ধে বাফেলো ক্রিমিনাল কোর্টে বেশ কটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তার নির্দিষ্ট কোন ঠিকানা না থাকায় (গৃহহীন) ঐসব মামলার একটিতেও সে হাজিরা দেয়নি। এমনি অবস্থায় ২৭ এপ্রিল ভরদুপুরে যিনার স্টিটের ১০০ ব্লকে গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হবার আশপাশের ভিডিও ফুটেজে প্রায় একইসময়ে তার অস্তিত্ব দৃশ্যমান হয়েছে। এর পরদিন ২৮ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৭ মিনিটে বাফেলো সিটির ইস্ট ডেলাভ্যান এবং নরফোক এভিনিউ থেকে পুলিশ ড্যাল ও কিউমিংস-কে গ্রেফতার করেছে। সে সময় তার কাছে গুলি ভর্তি রাইফেল-সহ ভয়ংকর কিছু সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। রাইফেলটি সে বেআইনীভাবে বহন করছিল। সোমবার তাকে বাফেলো সিটি কোর্টে জজ স্যামুয়েল পি ডেভিসের এজলাসে সোপর্দ করা হয়। সে সময় আদালত তাকে জামিনহীন আটকাদেশ দেন। একইসাথে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ মে সকাল পর্যন্ত রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে। বেআইনীভাবে এই অস্ত্র রাখা ও বহনের মামলাতে সে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে ডিস্ট্রিক্ট এটর্নী উল্লেখ করেছেন। জোড়া খুনের দায়ে জড়িত থাকলে সারাজীবন তাকে কারাগারেই কাটাতে হবে বলে একজন আইনজীবী উল্লেখ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিটি মেয়র এবং পুলিশ কমিশনারের বক্তব্য থেকে জানা যায়, দুই বাংলাদেশি আবু ইউসুফ (৩৯) এবং বাবুল মিয়া (৫৯) যে পরিত্যক্ত বাড়িতে কাজের জন্য গিয়েছিলেন, সেটি বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে। ড্যাল ও কিউমিংস ঐ বাসায় বাস করছিল। সেটি মেরামতের পর বিক্রি হয়ে গেলে সে থাকবে কোথায়-এ আশংকা থেকেই হয়তো ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে গুলি করেছে। তবে সে টার্গেট করে কিংবা বিদ্বেষের বশবর্তি হয়ে গুলি ছুড়েনি বলে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি দাবি করেন। অর্থাৎ সে সময় অন্য কেউ গেলেও গুলিবিদ্ধ হতেন।
পুলিশ কমিশনার জানান, গুলির শব্দ পেয়েই ৯১১ এ ফোন করা হয়। সাথে সাথে টহল পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখেন যে, একজন মারা গেছেন, আরেকজনকে গুরুতর অবস্থায় নিকটস্থ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গুলিতে নিহত সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ইউসুফ ৭ সন্তানের জনক ছিলেন। আরেকজন কুমিল্লার বাবুল মিয়ার দুই সন্তান এবং তার স্ত্রীর গর্ভে রয়েছে আরেকজন।