Today Is- Friday-22 Nov 2024

নিউইয়র্কে উৎসবমুখর বাংলাদেশ ডে প্যারেড (ভিডিও সহ)

নিউজ২৪ইউএসএ.কম ডেস্ক, নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ ডে প্যারেড’। ২৬ মে রবিবার‘ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট’র উদ্যোগে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে ৬৯ স্ট্রিট থেকে ৩৭ এভিনিউর ওপর দিয়ে ৮২ স্ট্রিট পর্যন্ত বিস্তৃত বহুল প্রত্যাশিত এ প্যারেডের প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র এরিক এডামস।
মেয়র এরিক এডামস তার বক্তব্যে বাংলাদেশিদের সততা-কর্মনিষ্ঠা এবং মেধার প্রশংসা করে বলেন, আমি এই কম্যুনিটির সাপোর্ট পাওয়ায় নিজেকে ধন্য মনে করি। সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশি আমেরিকানদের কল্যাণে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো।
প্যারেডের মঞ্চে মেয়র এডামসকে উপস্থাপন করেন নিউইয়র্ক সিটির সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে (চিফ এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার) অধিষ্ঠিত মীর বাশার। এসময় বিপুল করতালির মধ্যে তিনি মেয়রকে ‘আইকন অব দ্য প্যারেড’র ব্যাজ পড়িয়ে দেন।
প্যারেডের পক্ষ থেকে আহ্বায়ক শাহনেওয়াজ মেয়রকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করার আগে প্যারেড কমিটির চেয়ারপার্সন শাহ শহিদুল হক সাঈদ, প্যারেডের মার্শাল বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, ডেমক্র্যাট ফাহাদ সোলায়মান, ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাট লার্জ এ্যাটর্নী মঈন চৌধুরী, চিত্রনায়িকা মৌসুমী, আবাসন ব্যবসায়ী নুরুল আজিম, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বদরুল খান, বিএনপি নেতা কাজী আজম, প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যান্ড ন্যাশনাল হেলথকেয়ার চ্যাম্পিয়ন আব্দুল কাদের শিশির, স্টেট সিনেটর জেসিকা গঞ্জালেজ, কুইন্স বরোর ডেপুটি প্রেসিডেন্ট ইবনি ইয়ংসহ বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।
চিত্রনায়িকা মৌসুমী তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, প্যারেডের এ সুন্দর আয়োজনে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে আমরা একত্রিত হয়েছি। এই নিউইয়র্কে অনেক প্রবাসী দেখি নানা অনুষ্ঠানে। কিন্তু দেশের নামে কোন আয়োজনে সবাই কেন পিছিয়ে থাকে, সেটা অনেক খারাপ লাগে। আশা করি এর পরেরবার যখন আয়োজন হবে সবাই আসবেন। এবং এটা আমাদের দায়িত্ব। আমরা বাংলাদেশিরা এখানে আছি এবং কম্যুনিটি হিসেবে কত বড় তা সবাইকে দেখানো উচিত।
বক্তারা বলেন, সিটি মেয়র এরিক এডামস নানাবিধ কাজের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশিদের হৃদয় জয় করেছেন। প্যারেডে মেয়রের উপস্থিতিতে আমরা সকলে অভিভূত। এটা ইতিহাস হয়ে থাকবে।
প্যারেড সফলে প্রধান ভূমিকায় ছিলেন নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বাংলাদেশি অফিসাররা। সিটি পুলিশের চৌকষ দুটি ঘোড়াসহ ৫ শতাধিক পুলিশ অফিসারের সরব উপস্থিতি ছিল এ প্যারেডে। এবারই প্রথম জ্যাকসন হাইটসের ব্যস্ততম সড়ক বন্ধ করে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল প্যারেডের জন্যে। প্যারেডে অংশগ্রহণকারী প্রবাসীর অর্ধেকই ছিলেন পোশাক পরিহিত পুলিশ অফিসাররা। সিটির বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত বাংলাদেশিরাও নিজ নিজ ব্যানারসহ এসেছিলেন। বাংলাদেশি বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহনও ছিল।
মেয়র যখন বক্তৃতা করছিলেন মঞ্চের অদূরে বাংলাদেশি তরুন উইনি রোজারিও’র হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে অনেকে ব্যানার হাতে শ্লোগান দিচ্ছিল। উল্লেখ্য ২ মাস আগে বাংলাদেশি রোজারিও পুলিশের গুলিতে নিহত হন।


প্যারেড শুরু হবার আগে মূলমঞ্চে দেশের গান পরিবেশন করেন সঙ্গীত শিল্পী বিন্দু কণ্যা এবং শাহ মাহবুব। বাংলাদেশ ডে প্যারেডের সদস্য সচিব তরিকুল হোসাইন বাদল ও ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভলপমেন্ট ইউএসএ’র সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সোবহানের সহযোগিতায় উপস্থাপনায় ছিলেন জনপ্রিয় উপস্থাপিকা সোনিয়া।
জানা যায়, ২৫ বছর আগে ১৯৯৮ সালে কুইন্সের লং আইল্যান্ড সিটির কুইন্স ব্রিজ থেকে ২১ স্ট্রিট ধরে সর্বশেষ একটি প্যারেডের আয়োজন করেছিল ‘বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন’। দ্য সিটি কলেজের আড়াই লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্বকারি ‘ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট সিনেট’র নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান বিশ্বাসের উদ্যোগে সে প্যারেডে গ্র্যান্ড মার্শাল ছিলেন সে সময়ে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কে এম শিহাবউদ্দিন। সেই প্যারেড মাইলখানেক পথ অতিক্রম করে এস্টোরিয়ার রেইনি পার্কে জড়ো হয় এবং সেখানে বসেছিল বাংলাদেশি খাবার আর পন্যের জমজমাট মেলা।

CATEGORIES
Share This