নিউইয়র্কে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন এবং চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান (ভিডিও সহ)
নিউজ২৪ইউএসএ.কম.কম : নিউইয়র্কে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপন এবং চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অর্গানাইজিং কমিটি অব নর্থ আমেরিকা আয়োজিত মিলাদ মাহফিল ও মেজবানে প্রবাসী চট্টগ্রামবাসী ছাড়াও বাংলাদেশি কমিউনিটির বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন। আয়োজনে ছিল বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর পূণ্যময় জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা, দোয়া, মিলাদ মাহফিল এবং মেজবান। অনুষ্ঠানে ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান হয়। খবর ইউএসএনিউজঅনলাইন’র।
মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মোফাচ্ছিরে কুরআন, আওলাদে রাসুল (সা.) ও বাংলাদেশের দিনাজপুর ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাওলানা ড. সাইয়িদ এরশাদ আহম্মেদ আল্ বোখারি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অর্গাইনাইজিং কমিটি অব নর্থ আমেরিকার সদস্য সচিব জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ও কর্নফুলী ট্রাভেলসের সত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ সেলিম হারুন।
মিলাদ মাহফিলে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াতের পর নাত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানের আহবায়কের দায়িত্বে ছিলেন আলী আকবর বাপ্পি।সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অর্গাইনাইজিং কমিটি অব নর্থ আমেরিকার নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহানবী (সঃ)-এর বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক ও আদর্শের উপর আলোকপাত করে ড. সাইয়্যিদ এরশাদ আহম্মেদ আল্ বোখারি বলেন, রাসূল (সা.) ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। মহান আল্লাহ বিশ্বজগতের শান্তির দূত হিসেবে সমগ্র বিশ্ববাসীর রহমত হিসেবে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। তাঁর আগমনের এই স্মৃতিকে ধারণ করে প্রতি বছর আমরা পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন করি।
ড. সাইয়্যিদ এরশাদ আহম্মেদ আল্ বোখারি বলেন, বিশ্ববাসীকে মুক্তি ও শান্তির পথে আহ্বান জানান মহানবী (সঃ)। প্রতিষ্ঠা করেন মানুষের মর্যাদা ও অধিকার। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শিক্ষা ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে প্রিয়নবী (সা.) এর অনুপম জীবনাদর্শ, তাঁর সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণের মাধ্যমেই বিশ্বের শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে। মহানবীর (সঃ)-এর আদর্শই আজকের বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মহানবীর আদর্শ অনুসরনের মাধ্যমে ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরেই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জীবন চরিতের আলোকে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, এক শ্রেণীর জ্ঞানপাপী সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল (সা.) কে সাধারণ মানুষের সাথে তুলনা করেন। এ জ্ঞানপাপীরা জানেনা যে, রাসূল (সা.)কে সাধারণ মানুষ মনে করলে ঈমানই থাকবে না। যারা ইসলামের কথা বলে ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে ধর্মের বদনাম করছে, তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
মাহফিলে মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্ব মানবতার শান্তি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন ড. সাইয়্যিদ এরশাদ আহম্মেদ আল্ বোখারি।
মেজবানে ভাতের সঙ্গে গরু, খাশি এবং লাউ-ডালের তরকারি দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। প্রবাসী চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ আপ্যায়নে সহযোগিতা করেন। দলমত নির্বিশেষে সকল ভেদাভেদ ভুলে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী চট্টগ্রামবাসীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষজন এ মেজবানে অংশ নেন।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অর্গাইনাইজিং কমিটি অব নর্থ আমেরিকার সদস্য সচিব মোহাম্মদ সেলিম হারুন জানান, চট্টগ্রামের ঐতিজ্যবাহী এই মেজবান ২০১৪ সাল থেকে অত্যন্ত সফলতার সাথে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আনন্দ উদ্দীপনার মাধ্যমে বিশাল এ মেজবানে প্রায় ৪ হাজার লোকের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন স্টেট থেকে এই মেজবানে অতিথিরা উপস্থিত হন।
অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন মোহাম্মদ সামশুল আলম চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার শেখ খালেদ, মোহাম্মদ হানিফ, কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, কাজি নয়ন, মোহাম্মদ আরিফ, কামাল হোসেন মিঠু, নবী হোসেন, মাকসুদুল হক, আবু তাহের, সাইফুদ্দিন খান স্বপন, এনাম চৌধুরী, সৈয়দ এম রেজা, মোহাম্মদ রাসেল, বদিউল আলম বদি, মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাশেমী, আবুল কাশেম (চট্টলা), আলী নূও, জাফর ইকবাল খান, মোহাম্মদ ইসাহাক প্রমুখ।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অর্গাইনাইজিং কমিটি অব নর্থ আমেরিকার সদস্য সচিব মোহাম্মদ সেলিম হারুন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য সকলকে বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।