নিউইয়র্কে জেল হত্যা দিবস পালন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল : জ্বালাও-পোড়াও করে নির্বাচন ঠেকানো যাবে না (ভিডিও সহ)
নিউজ২৪ইউএসএ.কম : ১৫ই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সদ্য স্বাধীন দেশকে নেতৃত্বশূন্য করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা জাতীয় চার নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ১৫ আগস্ট, ৩রা নভেম্বর এবং ২১ শে আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা। বিচার বিভাগীয় কমিশনের গঠনের মাধ্যমে এসব হত্যাকান্ডের নেপথ্য নায়কদের বিচারের আওতায় আনলেই এসব জঘন্যতম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। নিউইয়র্কে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
নিউইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে গত ৫ নভেম্বর দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আকতার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুন ও আন্তর্জাতিক বিষযক সম্পাদক দেওয়ান বজলুর পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত ও দোয়া পরিচালনা করেন ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সাইফুর ইসলাম সিদ্দিকী। মুনাজাতে ১৫ই আগস্টের শহীদ ও ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিহত জাতীয় নেতাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, মুক্তিযোদ্ধা বিষযক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গির, ত্রাণ ও পূনর্বাসন সম্পাদক জাহাঙ্গির হোসেন, কার্যকরী সদস্য শরীফ কামরুল আলম হীরা, আওয়ামী লীগ নেতা আকতার হোসেন, কানেটিকাট স্টেট আওয়ামী লীগের সভাপতি জিহাদুল হক জিহাদ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শেখ আতিকুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গমাতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির সাবেক সভাপতি মোর্শেদা জামান, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ নেতা শেখ জামাল হুসেন, শাহ সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাঈনুদ্দিন, ইলিয়ার রহমান, জালাল হোসেন, হাসানাত প্রমুখ। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংড়ঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে জাতীয় চার নেতার রাজনৈতিক, সাংগঠনিক, সামাজিক ও কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করে বক্তারা বলেন, জাতীয় এ চার নেতা আপোষহীন আদর্শিক রাজনীতির উজ্জল নক্ষত্র। আদর্শবান ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে তারা বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাদের আদর্শ অনুকরণ-অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে জেল হত্যা দিবস পালনের সার্থকতা।
তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করা সম্ভব। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে বিস্ময়কর উন্নতি বাংলাদেশকে আজ মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরীত করেছে। আগামী ২০৪১ এ উন্নত দেশে পরিণত করতে আওয়ামীলীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।
বক্তারা বলেন, বিএনপি-জামায়াত সংবিধান বিরোধী ষড়যন্ত্র, হরতাল অবরোধের নামে আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যেতে চায়। তারা বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ নেই। জ্বালাও-পোড়াও করে নির্বাচন ঠেকানো যাবে না। ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড বাদ দিয়ে নির্বাচনে এসে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। দেশের মানুষের ভোট নিয়ে যদি আপনারা ক্ষমতায় আসতে পারেন আমরা আপনাদের সাধুবাদ জানাবো।
বক্তারা বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, দেশে-বিদেশে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা জাতীয় চার নেতা স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং স্বরাষ্ট্র, বেসামরিক সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষিমন্ত্রী এএইচএম কামরুজ্জামানকে ১৯৭৫ সালের ৩ রা নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।